রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন— مَنْ صَلَّى لِلَّهِ أَرْبَعِيْنَ يَوْمًا فِى جَمَاعَةٍ يُدْرِكُ التَّكْبِيْرَةَ الأُوْلَى كُتِبَتْ لَهُ بَرَاءَتَانِ بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ وَبَرَاءَةٌ مِنَ النِّفَاقِ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একাধারে চল্লিশ দিন তাকবিরে উলার (ইমামের প্রথম তাকবির) সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করবে, তাকে দুটি নাজাতের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ১. জাহান্নাম থেকে মুক্তি ২. মুনাফেকি থেকে মুক্তি।’ (তিরমিজি: ২৪১)
অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যখন ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর মহব্বতে টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ইমামের প্রথম তাকবির বলার সঙ্গে আদায় করে, সে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে মুক্ত এবং মুনাফেকি থেকেও মুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
এজন্যই আমাদের পূর্বসুরীরা তাকবিরে উলাকে বেশ গুরুত্ব দিতেন। তাবেয়ি সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহ.) একাধারে পঞ্চাশ বছর তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। (হিলইয়াতুল আওলিয়া: ৪/২১৫)
বিখ্যাত তাবেয়ি মুজাহিদ (রহ.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর একজন বদরি সাহাবিকে বলতে শুনেছি, তিনি তাঁর ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছেন, তুমি কি আমাদের সঙ্গে নামাজ পেয়েছ? ছেলে বললেন, জি, পেয়েছি। আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাকবিরে উলা তথা ইমামের সঙ্গেই তাকবির পেয়েছ? ছেলে বললেন, না। তিনি বললেন, তুমি একশ কালো চোখবিশিষ্ট উটের চেয়ে অধিক কল্যাণ হারিয়েছ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ২০২১)
সুতরাং ইমামের প্রথম তাকবির বলার সঙ্গে তাকবির বলে নামাজ শুরু করলে তাকবিরে উলা পাওয়া যাবে, অন্যথায় নয়। হাদিসে براءة من النفاق বা ‘নিফাক থেকে মুক্তি মেলা’ প্রসঙ্গে আল্লামা তিবী বলেন, ওই লোক তার সালাতের বদৌলতে দুনিয়াতে মুনাফেকের মতো আমল করা থেকে নিরাপদ থাকবে এবং একনিষ্ঠ মুখলিছের মতো আমল করার তাওফিক লাভ করবে। আর আখেরাতে সে মুনাফেকের জন্য বরাদ্দ শাস্তি থেকে নিরাপদে থাকবে। সে মুনাফেক ছিল না, সেই সাক্ষ্য দেওয়া হবে। (তুহফাতুল আহওয়াজি: ২/৪০)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ফরজ নামাজ তাকবিরে উলা বা প্রথম তাকবিরে সঙ্গে পড়ার চেষ্টা করা। হাদিসে বর্ণিত ফজিলত লাভের জন্য অন্তত ৪০ দিন টানা পড়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্দর আমলটি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।