- বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, সবাইকে নিয়ে একটি সম্মিলিত রাজনৈতিক কিংবা নিরাপত্তা কাউন্সিল করা যায় কি না এমন প্রস্তাব এসেছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
বৈঠকে বাংলাদেশের সব কটি রাজনৈতিক দল উপস্থিত ছিল জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, এই বৈঠকে সবাই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন। সভায় সব সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমিকার প্রশংসা করা হয় এবং যেকোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার কথা বলা হয় বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘যেকোনো ধরনের অপপ্রচার ও উসকানির বিরুদ্ধে আমরা সাহসী, অটুট ও ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা গোটা জাতি ভারতের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ রয়েছি।এজন্য সবাই মিলে একটি সমাবেশ করতে পারি কি না, পলিটিক্যাল কাউন্সিল করতে পারি কি না, এমনকি নিরাপত্তার কাউন্সিল করতে পারি কি না এই প্রস্তাব আনা হয়েছে বৈঠকে।’
মত, পথ, আদর্শের ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু দেশ, সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে সবাই এক- বৈঠকের মূল সুর এমন ছিল উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সবার ওপরে দেশ এবং এটা থেকে আমরা কখনো বিচ্যুত হব না। বাংলাদেশকে দুর্বল, শক্তিহীন, নতজানু ভাবার কোনো অবকাশ নেই, এই বার্তা প্রকাশ করতে, এই বার্তা জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশবিরোধী বিভিন্ন তৎপরতা চলছে। হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ, বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা- এসবের তীব্র নিন্দা জানানো হয় বৈঠকে। ভারতের এসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার যে আত্মমর্যাদাশীল সাহসী ভূমিকা তার প্রশংসা করা হয় এবং সরকারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা হয়।’ একই সঙ্গে ভারতের এসব প্রচারণার বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালীভাবে এবং আরও বেগবানভাবে মোকাবেলার মত দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
এজন্য আমাদের যারা প্রবাসী, বন্ধুরাষ্ট্রের সহযোগিতা এবং বিদেশি সাংবাদিকদের নিয়ে আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে’ জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের যোগাযোগ দক্ষতা এবং আইনি দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সাথে গত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ভারতের সাথে যত চুক্তি হয়েছে সেটা প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।’ রামপালসহ বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর যেসব চুক্তি রয়েছে, সেগুলো বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের যে অর্থনৈতিক নিপীড়ন, সাংস্কৃতিক আধিপত্য, অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টা সেটা নিন্দা জানানো হয়। ভারতকে বাংলাদেশের প্রতি মর্যাদাশীল এবং সৎ প্রতিবেশী আচরণ করার আহ্বান জানানো হয় বৈঠকে।’
‘ভারত বাংলাদেশবিরোধী যে অপ্রচারণা চালাচ্ছে, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব সম্প্রদায়ের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। যেকোনো উস্কানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।’ বলেন আইন উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই একটা কথা বলেছেন আমাদের আর শক্তিহীন, দুর্বল, নতজানু ভাবার কোনো রকম অবকাশ নেই। যেকোনো ধরনের অপপ্রচারণ এবং উস্কানির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং আমাদের ঐক্য অটুট রাখব। আমরা সাজাগ থাকব ভবিষ্যতে যেকোনো প্রচারণা এলে, উস্কানি এলে আমরা আমাদের ঐক্যকে আরো বেগবান রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।’