মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মশাল মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বটতলা এলাকায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়ের সঞ্চালনায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘ভারত বারবার বলতে চেয়েছে তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছিলো, যার ফলে নাকি আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি। এই স্বীকৃতি নিয়ে তারা আমাদের দেশ থেকে যত ধরনের সুবিধা নেওয়া যায়, সবকিছু নিয়েছে। দুঃখের বিষয়, ফ্যাসিস্ট শাসকদের সময় ভারত আমাদের দেশ থেকে যেসব সুবিধা পেত, গণঅভ্যুত্থানের পরে গঠিত সরকার তা একবারের জন্যও দেয়নি। আমাদের দেশের মানুষ এখনো পানির ন্যায্য হিস্যা পায় না, অথচ সেই পানি ভোগ করছে ভারত।
আমাদের দেশের নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতি কোনোভাবেই বজায় থাকেনি ভারতীয় আগ্রাসনের কারণে। জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সরকার এসেছে, এখন পর্যন্ত তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। গতকাল বাংলাদেশি দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে, তার কোনো সমাধান এখনো হয়নি। ভারত যত বড় সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র হোক না কেন, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা জনগণকে শাসন করতে পারবে না।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার একাংশের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘ভারতে বাংলাদেশি দূতাবাসে স্থানীয় কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদী একত্রিত হয়ে হামলা করেছে। এটি সরাসরি আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের উপর হামলা। আমাদের দেশের উপর হামলার জন্য যতটুকু দায় নেওয়া উচিত, আমাদের দূতাবাসের উপরেও হামলার জন্য ততটুকু দায় নেওয়া উচিত। ভারতকে জানিয়ে দিতে চাই, আপনাদের তাবেদার শেখ হাসিনার শাসনামল শেষ হয়েছে। বাংলাদেশকে আগের চোখে দেখলে আপনারা ভুল করবেন। বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে এ দেশের ছাত্র-জনতা যে বক্তব্য ছড়িয়ে দিচ্ছে, সেদিকে খেয়াল করুন।
আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে যদি এই হামলার দায় স্বীকার না করেন, তাহলে আমরা আপনাদের (ভারতের) দূতাবাস ঘেরাও করতে বাধ্য হবো। আপনাদের দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় দাঙ্গা বাধানোর একটি ষড়যন্ত্র পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। আপনারা চাচ্ছেন বাংলাদেশে বিভাজন সৃষ্টি করে সেখান থেকে ফায়দা নিতে। এটা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
আমরা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়েছি। আমরা আপনাদেরকেও রুখে দেব।’